জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত নতুন দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ আত্মপ্রকাশ করেছে। আর এ নতুন দলের আহ্বায়ক করা হয়েছে সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে আখতার হোসেনকে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মানিকমিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ও আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নাম ঘোষণা করেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহত শহীদ মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন রাব্বীর বোন মীম আক্তার। মীম আক্তার বলেন, ইতিহাসে দেখিনি বোনের কাঁধে ভাইয়ের লাশ। আমরা দুই বোনের কাঁধে ছিল ভাইয়ের লাশ।
এতে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন শামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হয়েছেন ডা. তাসনিম জারা, নাহিদা সরওয়ার রিভা, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হয়েছেন হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হয়েছেন সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক হয়েছেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হয়েছেন আবদুল হান্নান মাসউদ। যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়েছে নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারামিন, মাহবুব আলম, সারওয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তুজরুবা জাবিন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিম, এহতেশাম হক এবং হাসান আলী। যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, রশিদুল ইসলাম রিফাত, মাহিন সরকার, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসাইন, এস এম সাইফ মুস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তরে সংযুক্ত), আলাউদ্দিন মুহাম্মদ, ফরিদ উদ্দীন, মোহাম্মদ ফারহাদ আলম ভুইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম তুহিন, মুশফিকুর সালেহিন, ড. জাহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, হুমায়রা নুর, মুশফিকুর রহমান জুহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, শাগুপ্তা বুশরা বিসমা, আহনাফ সাঈদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজাউদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেক রেজা, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদিন শিশির, মোহাম্মদ মুনতাসির রহমান, গাজী সালাউদ্দিন তানভীর, তামিম আহমেদ এবং তাহসিন রিয়াজ। যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা মিতু, মোল্লা রহমতুল্লাহ, এম এম শাহরিয়ার, জোবায়ের আরিফ। যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সাইফুল্লাহ হায়দার, আলী নাসের খান, সাকিব মাহদি, মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সাদিয়া ফারজানা দিনা, অলিক মৃ, হানিফ খান সজিব।
যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মো. তারিকুল ইসলাম (যুব উইং), ডাক্তার আব্দুল আহাদ, দিলশানা পারুল, আবু হানিফ, আব্দুস জাহের, মাজহারুল ইসলাম ফকির, কৃষিবীদ গোলাম মোর্তজা সেলিম, আশিকিন আলম, ডা. জাহিদুল বারি, কৈলাশ চন্দ রবিদাস, ডেভিড রাজু, শেখ মো. শাহ মইন উদ্দিন, মারজুক আহমেদ ও সাদ্দাম হোসেন। বিকেল ৪টার পর নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
রাজনীতিতে পরিবর্তনের প্রত্যাশা সবার: জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে যোগ দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসেছেন। তাদের প্রত্যাশা, নতুন এ রাজনৈতিক দলের হাত ধরে দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আসবে। অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। তিনিও এসেছেন নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সেই একইধারার রাজনীতি চলছে। আমরা এটা দেখতে দেখতে বিরক্ত। তিনি বলেন, চাঁদাবাজি-লুটপাট-মারামারি এগুলো আমরা আর চাই না। প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনবে, নতুনভাবে দেশ গঠনে পদক্ষেপ নেবে, আমাদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করবে— এটাই আশা করছি। একইসুরে কথা বলেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, বৈষম্যহীন ও ব্যতিক্রমধর্মী একটা রাজনৈতিক দল যেন গঠন হয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাদরাসা কিংবা চাকরিজীবী থেকে দিনমজুর— সব পর্যায়ের মানুষ যেন এতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। পাশাপাশি দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি মুক্ত একটা দেশ গঠনে তারা যেন নেতৃত্ব দিতে পারে— এটাই প্রত্যাশা। এর বাইরে বেশি কিছু চাওয়ার নেই। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন খাইরুল ইসলাম। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে এসেছি। বলতে পারেন ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি। তিনি বলেন, যাদের নেতৃত্বে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, তাদের নেতৃত্বে এবার নতুন বাংলাদেশ গড়ব। এর আগে, বিকেল সোয়া ৪টায় তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। এরপর পবিত্র গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল থেকে পাঠ করা হয়। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর জুলাই আগস্টে নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং নিজ নিজ ধর্মমতে তাদের জন্য দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকার, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সাইফুল্লাহ হায়দার, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি শাহরিয়ার হাসনাত অপু। মঞ্চে উপস্থিত আছেন নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সামান্তা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুমসহ জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। অনুষ্ঠান শুরুর আগে মানিক মিয়া এভিনিউ লোকে লোকারণ্য হয়ে গেছে। নতুন এই দলের আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে যোগ দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র-জনতা। বাংলাদেশকে আর কখনও বিভাজিত করা যাবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতপন্থী-পাকিস্তানপন্থী কোনো রাজনীতি চলবে না। বাংলাদেশকে আর কখনও বিভাজিত করা যাবে না। তিনি আরও বলেন, আমরা সামনের কথা, সম্ভাবনার কথা ও স্বপ্নের কথা বলতে চাই। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে আজ আমরা কাজ এখানে এসেছি। জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, গত ১৫ বছর দেশে যে বিভাজনের রাজনীতির ষড়যন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা তা ভেঙ্গে দিয়েছি।
গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রের কথা বললেই গুম-খুন করা হয়েছে: দেশে গত ১৫ বছরে গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলেই গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, বিদেশসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় থাকা আপামর জনগোষ্ঠী অক্লান্ত পরিশ্রম করে জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতার সূর্য নতুনভাবে উদিত করেছেন। আজকের এই ঐতিহাসিক আরেকটি সন্ধিক্ষণে আমরা একত্রিত হয়েছি। তিনি বলেন, গত ৫৩ বছর যে রাজনৈতিক ইনস্টিটিউশনগুলো তৈরি হয়েছে, তার কোনো সিস্টেম বর্তমানে কাজ করছে না। এমন অবস্থায় ছাত্র ও তরুণদের একটি রাজনৈতিক ভূমিকা অপরিহার্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন দলের মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, গত ১৫ বছরে যখন আমরা গণতন্ত্রের কথা বলেছি, তখন আমাদেরকে গুম-খুন করা হয়েছে, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্ধকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু গ্রেপ্তার নয়, দেশছাড়াও করা হয়েছিল অনেককে। এসব প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও সেই খুনি হাসিনার সামনে ইস্পাত কঠিন মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, পক্ষ এবং গোষ্ঠী বাংলাদেশের সেই ’৪৭ সাল থেকে যে লড়াই শুরু হয়েছিল, তারা তাদের সেই পতাকাটা মানুষের সামনে উড্ডীন করে রাখে। কিন্তু গত নির্বাচনের পর মানুষ যখন আশাহত হয়েছিল, তখন ছাত্ররা শেষ আশার প্রতীক হিসেবে জনগণের সামনে উদয় হয়।তিনি বলেন, আমরা এজন্য যেসব রাজনীতিকবৃন্দ, দল, পক্ষ, গোষ্ঠী গত ১৫ বছরে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেন, গণগ্রেফতারের শিকার হয়েছেন, দেশছাড়া হয়েছেন, জীবনের আর্থিক মূল্য খুইয়েছেন, আমরা আজ এ মঞ্চ থেকে তাদেরকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার ভিডিও, ভুয়া ভুয়া স্লোগান: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মেলবন্ধনে বিশাল আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশ ঘটলো জাতীয় নাগরিক পার্টির। দলটির আত্মপ্রকাশ ঘিরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়েছে। ডকুমেন্টারির প্রথমে প্রচার করা হয়েছে শেখ হাসিনার একটি ভিডিও, যা দেখেই ভুয়া ভুয়া স্লোগানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় অনুষ্ঠানস্থলে। এদিন বিকেল ৪টার পর রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর দুটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার ঢল,মূল লক্ষ্যঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া: তরুণদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট বড় দলে দলে এসেছেন ছাত্র-জনতা। ছাত্র-জনতার নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হন। সারা দেশ থেকে দলটির কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশ স্থলে এসেছেন। মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আগতরা বলছেন, ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে এসেছি। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ নামে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। এদিন দুপুরের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিশেষ করে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, খুলনা, বরিশাল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, রাজশাহী, গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাবেশ ল বিভিন্ন স্লোগানে মুখর হতে থাকে। বাস থেকে নেমে কর্মী সমর্থকরা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে সমাবেশস্থলে জড়ো হন। এ সময় তাদের ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। বৈষম্যমুক্ত নতুন একটি বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যাশা করে খুলনা থেকে সমাবেশে আসা মিজানুর রহমান কবির বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন, তাদের জীবনদানের প্রত্যাশা যেন পূরণ হয়, নতুন দলের কাছে এই প্রত্যাশাই করি।
সমাবেশস্থলেই জুমা পড়লেন জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মী-সমর্থকেরা: তরুণদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ হওয়া বাকি আর মাত্র ঘণ্টা খানেক। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছোট বড় দলে দলে আসছেন ছাত্র-জনতা। মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মঞ্চের দিকে এগোচ্ছেন তারা। এ সময় ছাত্র-জনতা ও দলের নেতাকর্মীদের অনেককে সমাবেশস্থলে জুমার নামাজ পড়তে দেখা গেছে। এদিন দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে জাতীয় নাগরিক কমিটির এক নেতা নামাজের ঈমামতি করেন। এ সময় উপস্থিত ছাত্র-জনতা ও সমাবেশে আসা অতিথিরা নামাজে অংশ নেন।
৬৪ জেলা থেকেই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন মানুষ: দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে নেতা কর্মীদের পাশাপাশি জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত যোদ্ধারা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়া দেশের ৬৪ জেলা থেকেই মানুষজন অনুষ্ঠানে এসেছেন। দেশের উত্তরের জেলা জয়পুরহাট থেকে ২০০ জনের একটি দল এসেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। তাদের মধ্যে মঞ্জিল হাসান মুরাদ একজন। তিনি তার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, জুলাই আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। নিজের তাগিদ থেকেই তরুণদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসেছি। মূল লক্ষ্য এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হওয়া। রাজধানীর উত্তরা থেকে ৮ জন মিলে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এসেছেন বুলবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আজ আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। আজ থেকে দেশের ইতিহাসে তরুণদের দলের নাম লেখা হবে। এটা সব শ্রেণিপেশা মানুষদের প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষার একটি দল হতে যাচ্ছে। তাই এই ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতেই অন্যদের মতো আমরা এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি। আশা করা যাচ্ছে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে আজ এখানে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে রিজভী-এ্যানি: তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এদিন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির আহমেদ আলী কাসেমী, বিকল্পধারার নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমেদ, লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্য জোটের সহ সভাপতি জসিম উদ্দিন, বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমেদ আবদুল কাদের। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে কূটনৈতিকদের মধ্যে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের পক্ষে একজন কাউন্সিল অংশ নিয়েছেন বলে মঞ্চ থেকে জানানো হয়।

দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তনের প্রত্যাশা
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ
- আপলোড সময় : ২৮-০২-২০২৫ ১০:৩৬:৩৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৮-০২-২০২৫ ১১:৪৯:৫৯ অপরাহ্ন


নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ